ফ্রম লাদাখ উইথ লাভ! (Part 01)
লেহ-লাদাখ একটা স্বপ্নের নাম । আমার জন্যও তা ব্যাতিক্রম ছিল না । হঠাৎ করেই এই স্বপ্নের জায়গায় ভ্রমণের সুযোগ মিলে যাবে, তা কল্পনাতেও ছিল না ।
আকাশের ওপর মরুভূমি, টার্গেট ১৮,০০০ ফিট, নানান ঘটনা-দুর্ঘটনায় সদস্য সংখ্যা ৬ । সময় মাত্র দিন ১০, জী, মাত্র ১০ দিন । কারন আর কিছুই না, আমাদের সুবিশাল লক্ষ্য । প্ল্যান ছিল মূলত দুটো, একটায় দিল্লি-জম্মু-শ্রীনগর-লাদাখ-মানালি-দিল্লি । তবে সময়টা বৈরি, শ্রীনগর-মানালি হাইওয়ে থাকে বন্ধ আর লাদাখের নানান জায়গা ভ্রমণের পারমিট দিল্লী থেকে নিতে হয় এবং তাতে বিস্তর সময়ক্ষেপণ, এম্নিতেই হাতে সময় সীমিত, দিল্লিতে তাই পারমিটের জন্য সময় দেয়া এককথায় ছিল অসম্ভব । লাদাখে গিয়ে পারমিট পাওয়া যায় কিনা, তা দেখা ছাড়া উপায় তাই ছিল না । । তো এমন ক্ষেত্রে আমরা যা করি, প্ল্যান বি তাই তৈরি করেই এগুনো । প্ল্যান বি ছিল দিল্লি-জম্মু-শ্রীনগর-লাদাখ- শ্রীনগর-জম্মু-দিল্লি (পরবর্তীতে বিস্তারিত) । এ ক্ষেত্রে মেইন লেহ-লাদাখ শহর ঘুরেই আমরা ব্যাক করবো । ‘যা হবে দেখা যাবে’ মাথায় নিয়েই তাই শুরু করে দিলাম আমাদের অভিযান ।
আকাশের ওপর মরুভূমি, টার্গেট ১৮,০০০ ফিট, নানান ঘটনা-দুর্ঘটনায় সদস্য সংখ্যা ৬ । সময় মাত্র দিন ১০, জী, মাত্র ১০ দিন । কারন আর কিছুই না, আমাদের সুবিশাল লক্ষ্য । প্ল্যান ছিল মূলত দুটো, একটায় দিল্লি-জম্মু-শ্রীনগর-লাদাখ-মানালি-দিল্লি । তবে সময়টা বৈরি, শ্রীনগর-মানালি হাইওয়ে থাকে বন্ধ আর লাদাখের নানান জায়গা ভ্রমণের পারমিট দিল্লী থেকে নিতে হয় এবং তাতে বিস্তর সময়ক্ষেপণ, এম্নিতেই হাতে সময় সীমিত, দিল্লিতে তাই পারমিটের জন্য সময় দেয়া এককথায় ছিল অসম্ভব । লাদাখে গিয়ে পারমিট পাওয়া যায় কিনা, তা দেখা ছাড়া উপায় তাই ছিল না । । তো এমন ক্ষেত্রে আমরা যা করি, প্ল্যান বি তাই তৈরি করেই এগুনো । প্ল্যান বি ছিল দিল্লি-জম্মু-শ্রীনগর-লাদাখ- শ্রীনগর-জম্মু-দিল্লি (পরবর্তীতে বিস্তারিত) । এ ক্ষেত্রে মেইন লেহ-লাদাখ শহর ঘুরেই আমরা ব্যাক করবো । ‘যা হবে দেখা যাবে’ মাথায় নিয়েই তাই শুরু করে দিলাম আমাদের অভিযান ।
শুরুতেই ছিল আমার সঙ্গীদের নিয়ে এক্সসাইট্মেন্ট, কারণটাও অল্প কথায় বলে ফেলি, এবারের ট্যুরমেটরা সবাই, আমার ট্যুর জীবনের মোটামুটি শুরুর দিকের সঙ্গিসাথি । মাঝে জীবনের নানান বাস্তবতায় একসাথে যাওয়া হয় নি কোথাও । অনুভুতি তাই নানান সুবিশেষণে বিশেষায়িত ।
চট্টগ্রাম থেকে আমরা ছিলাম ৪ জন, বাকি ২ জন আসছিলো ঢাকা থেকে । রাতের তূর্ণা নিশিথা ট্রেনে, উঠে পড়লাম একসাথে, গন্তব্য আখাউরা রেলস্টেশন । উদ্দেশ্য আগরতলা বর্ডার । শেষ রাতের আগে আগে আমরা সবাই পৌঁছে গেলাম এবং প্রাথমিক সৌজন্য-সাক্ষাত শেষে, আড্ডা দিতে দিতে, সূর্য ওঠার সাথে সাথেই সিএনজী-যোগে রওয়ানা দিলাম বর্ডারের উদ্দেশ্যে ।
আগরতলা বর্ডার নিতান্তই ছিল ভিড়ভাট্টা, কোলাহলহীন । আমরা ছাড়া ছিল আর মাত্র একটি গ্রুপ । দিন বাড়ার সাথে সাথে যদিও বেড়েছে মানুষ । তবে কোন ঝামেলা ছাড়াই ইমিগ্রেশন পার হয়ে, টাকা ভাঙ্গানোর ঝক্কি শেষে, ঠিক মতই পৌঁছে গেলাম আগরতলা এয়ারপোর্টে । এবার অপেক্ষার পালা । প্লেন-এ বোর্ডিং টাইমের অনেক আগেই পৌঁছে গিয়েছিলাম, সাথে যুক্ত হয়েছিলো রাতজাগা ট্রেন জার্নির ক্লান্তি । সবার চোখেই ঘুম, আমরা সবাই আবার খুব ঘুম প্রিয়, (বিবরণের পরবর্তী অংশে ছবিসহ প্রমাণ উপস্থাপিত হবে) তাই সুযোগের উপযুক্ত ব্যবহার করে সবাই কাইতচিত হয়ে একচোট ঘুমিয়ে নিলুম ।
ঘুম ভেঙ্গেই তোরজোড় শুরু হয়ে গেলো বিমানে উঠার । সকল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে, চড়ে বসলাম হাওয়াই যানে । কলকাতায় ট্রানজিট এবং ফের বিমানে দিল্লীর উদ্দেশ্যে গমন । মনের আনন্দে গল্পসল্প করতে করতে, জানালা দিয়ে দৃষ্টিসীমানা বিস্তৃত আকাশ দেখতে দেখতে, এবং আবার খানিক ঘুমিয়ে পৌঁছে গেলাম দিল্লী । হাসিমুখে বিমান থেকে অবতরণ করতেই খেলাম বিশাল ঝটকা! একি ভাই! নিজেকে যেন আবিস্কার করলাম জ্বলন্ত আগুনের চুল্লিতে । এতো গরম! দিল্লীর আবহাওয়ার খবর সম্পর্কে ছিলাম বেমালুম! বাতাস যা গায়ে লাগছিলো, মনে হচ্ছিলো বারবিকিউ করছে আমাকে কেউ । আমরা ভাই, বাঙালি বীর, ৩৭-৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসেই পগারপার, কিন্তু দিল্লীতে তাপমাত্রা ৪৪ ডিগ্রি, তাও তখন রাতের বেলা, সময় বোধহয় ৮টা ছুইছুই ! যাইহোক, মনে যার ভ্রমণের অদম্য নেশা, তাকে ঠেকাবে কে? এই তাপমাত্রা মাথায় নিয়েই তাই গমন কাশ্মীরি গেট এর উদ্দেশ্যে । নানান গবেষণা এবং সুহৃদ কিছু অপরিচিত সহযাত্রীর সহযোগিতায় জীবনের প্রথম মেট্রোরেল-এ উঠে বসলাম । একবাক্যে বলছি, অসাধারণ অভিজ্ঞতা! এতো পরিষ্কার, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, সময় বাঁচানো যান এবং এই মেট্রোতে যাত্রার পর আমি খুব, খুব আগ্রহ নিয়ে বসে আছি আমাদের ঢাকার মেট্রোরেলের জন্য । আশা করছি, অনতিদূরেই রাজধানীবাসির জন্য অপেক্ষা করছে দারুন কিছু । আমি খুব আশা নিয়ে অপেক্ষা করছি ।
যাইহোক, ফিরে যাই জ্বলন্ত দিল্লীতে! মেট্রোরেলের অভিজ্ঞতার রেশ কাটতে না, কাটতেই আক্কেল্গুরুম হয়ে গেলো জম্মুর বাস ঠিক করতে গিয়ে । এসি বাস সব ছেড়ে চলে গেছে জম্মুর পানে । আছে শুধু এসি ছাড়া বাস । এমনিতে এসি আমাদের জন্য অবশ্যক ছিল না কিন্তু দিল্লীর সেই গরমে, আমাদের প্রান ওষ্ঠাগত, তাই হন্যে হয়ে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস খোঁজা । কপালে ছিল না, কিন্তু যেতে তো হবেই, তাই আর দেরি না করে উঠে পড়লাম ওই বাসে । দিল্লী থেকে জম্মু, টানা ১০ ঘণ্টার পথ । সবার চোখে ঘুম, গায়ে ঘাম, তাপমাত্রা ৪৪! সে ছিল এক বাস জার্নি, আজীবন মনে থাকবে! আমাদের সবার মনে শুধু আশা, ‘আহ, আরেকটু পরেই জম্মু কাশ্মির, আর কাশ্মীর মানেই আরাম! কিন্তু সকালে যেই পদার্পণ করলাম, জম্মু আমাদের বরণ করে নিলো ৪৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা দিয়ে । তড়িঘড়ি করে যে যেদিকে পারি ছুটে গেলাম গাড়ি ঠিক করার জন্য যেটা আমাদের নিয়ে যাবে শ্রীনগর, কাশ্মীর । এবং এখানেই পেয়ে গেলাম আমাদের গাড়ির পাইলট, জনাব ওয়ানি জাভেদ, খুব অল্প সময়েই আমাদের সবার প্রিয় হয়ে ওঠা জাভেদ ভাইকে । আমাদের সমগ্র টুরের অনেকাংশ জুড়েই উনি ছিলেন আমাদের সাথে । সমগ্র ট্যুরে নানান ভাবে আমরা উনার কাছে কৃতজ্ঞ । আমাদের সঠিক ভাবে, সঠিক জায়গায় পৌঁছে দেয়া, আমাদের বাজেট অনুযায়ী থাকার এবং খাবার ব্যবস্থা, আমাদের সম্পূর্ণ টেনশন ফ্রি ঘুরাঘুরি, সব কিছুতেই আমাদের প্রচণ্ড ভাবে সাহায্য করেছেন এই জাভেদ ভাই । কাশ্মির-এ যাতে আমাদের কোন কিছু মিস না হয়, তাই ছিল যেন উনার ধ্যান-জ্ঞান । সবসময় উনার ‘আপ কিউ টেনশন লে রাহে হো? আপ স্রেফ রিলাক্স কিজিয়ে” – এই কথা আমাদের দিয়েছে মানুষিক প্রশান্তি ।
জম্মু থেকে ছিল আমাদের শেয়ারড গাড়ি । পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে গড়ে ওঠা ওয়ান-ওয়ে, আঁকাবাঁকা রাস্তায়, ট্র্যাফিকের মধ্যে দিয়ে শ্রীনগর পৌছাতে পৌছাতে মাঝ রাত । সবার মাথায় তখন চিন্তা, রাতে পিঠ লাগাবো কোথায়? জাভেদ ভাইকে বলতেই, হাসিমুখে বন্দোবস্ত হয়ে গেলো কাশ্মীরের অনিন্দ্যসুন্দর ডাললেকের জনপ্রিয় হাউসবোটে । সে এক রাজকীয় ব্যাপার! হাউসবোটগুলো ভেতরে এতো সুন্দর করে সাজানো, ঠিক যেন কোন রাজার বাগানবাড়ি । মনোমুগ্ধকর নকশায় আঁকা কার্পেট, ঝাড়বাতির আড়ালে সহসাই আমরা হারিয়ে গেলাম! কিসের ক্লান্তি, সবাই তখন এক একজন টপলেভেলের ফটোগ্রাফার! এরপর হাল্কাপাতলা খেয়ে সবাই ডাইরেক্ট বিছানায় এবং একঘুমে সকাল ।
সম্পূর্ণ লেখায় কোথাও খরচের কিছুই উল্লেখ করা হয় নি । সম্পূর্ণ খরচ আলাদা করে এবার দেয়া হবে । যেই এই লেখা পরবেন, একটা জিনিস মাথায় রাখবেন, আমরা যখন গিয়েছি তখন টুরিস্ট সিজন মাত্র শুরু হয়েছে, মানুষ কম বিধায় অনেক কিছুই আমরা অনেক কম খরচে পেয়েছি আর যাই ঠিক করেন, করার আগে ভালভাবে, সুন্দরভাবে দামাদামি করে নিবেন ।
সম্পূর্ণ লেখায় কোথাও খরচের কিছুই উল্লেখ করা হয় নি । সম্পূর্ণ খরচ আলাদা করে এবার দেয়া হবে । যেই এই লেখা পরবেন, একটা জিনিস মাথায় রাখবেন, আমরা যখন গিয়েছি তখন টুরিস্ট সিজন মাত্র শুরু হয়েছে, মানুষ কম বিধায় অনেক কিছুই আমরা অনেক কম খরচে পেয়েছি আর যাই ঠিক করেন, করার আগে ভালভাবে, সুন্দরভাবে দামাদামি করে নিবেন ।
সর্বপ্রথম, আমাদের ডোমেস্টিক ফ্লাইট ছিল, আপ-ডাউন, আগরতলা-দিল্লী – ১২,১০০ টাকা
দিল্লী এয়ারপোর্ট - কাশ্মীরি গেট – (বাস+মেট্রো সার্ভিস) – ১১০ রুপি
কাশ্মীরি গেট, দিল্লী – জম্মু, সরকারি বাস – ৫৬০ রুপি
জম্মু – শ্রীনগর, শেয়ারড গাড়ি – ১৩০০ রুপি
ভিডিও লিঙ্ক - https://www.youtube.com/watch?v=9EgWXH4-_Z0
যেখানে সেখানে ময়লা ফেলে পরিবেশের ক্ষতি করবেন না। একজন ট্রাভেলার হয়ে অন্য ট্রাভেলার কে সম্মান করুন, আপনিও সম্মানিত হবেন। বিশেষ করে নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা আর সম্মানশীল হোন
দিল্লী এয়ারপোর্ট - কাশ্মীরি গেট – (বাস+মেট্রো সার্ভিস) – ১১০ রুপি
কাশ্মীরি গেট, দিল্লী – জম্মু, সরকারি বাস – ৫৬০ রুপি
জম্মু – শ্রীনগর, শেয়ারড গাড়ি – ১৩০০ রুপি
ভিডিও লিঙ্ক - https://www.youtube.com/watch?v=9EgWXH4-_Z0
যেখানে সেখানে ময়লা ফেলে পরিবেশের ক্ষতি করবেন না। একজন ট্রাভেলার হয়ে অন্য ট্রাভেলার কে সম্মান করুন, আপনিও সম্মানিত হবেন। বিশেষ করে নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা আর সম্মানশীল হোন
Comments
Post a Comment