Skip to main content

Posts

ফ্রম লাদাখ উইথ লাভ! (Part 03 - The End)

লাদাখ যাবার রাস্তা দুটো, দিল্লী থেকে মানালি হয়ে অথবা শ্রীনগর দিয়ে । এই দুই পথে ফেরাও যায় । অধিকাংশ মানুষ এক পথে যায় এবং অন্য পথে ফিরে আসে । আমাদের প্ল্যানও সেরকমই ছিল কিন্তু মানালি দিয়ে যে রাস্তা, তা বরফের কারণে বন্ধ ছিল । যার কারণে ওই পথে যাওয়া বা আসা কোনটাই আমাদের হয়ে ওঠে নি । আমরা লাদাখ থেকে ফেরার ২-৩ দিন পরেই অবশ্য রাস্তাটা খুলে দেয়া হয় । সময়স্বল্পতার কারণে আমরা অপেক্ষা করতে পারি নি নতুবা দুদিন বেশি থেকে মানালি রাস্তা দিয়েই আমরা দিল্লী ফিরতাম । শ্রীনগর থেকে লাদাখ যাবার ব্যাপারে আসলে যা বলবো তাই কম বলা হবে । পথের দূরত্ব প্রায় ৪২০ কিলো, আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ, কোথাও বরফ, কোথাও কাঁদা, কোথাও আবার সুন্দর পিচঢালা রাস্তা । এই রাস্তা যে কি রাস্তা তা আসলে বুঝতে হলে স্বচক্ষে অবলোকন এর কোনই বিকল্প নেই । প্রথমেই পড়ে সোনমার্গ – বরফে ঢাকা সোনমার্গ এক অনিন্দ্যসুন্দরি । যদিও সোনমার্গ-এ একদমই সময় আমরা ব্যয় করি নি, কারণ আমাদের প্রধান লক্ষই ছিল লেহ-লাদাখ আর এতো দুরের পথ, সময় খুব সাবধানে হিসাব করতে হয় । এর সাথে আছে রাস্তায় ট্র্যাফিকএর হ্যাপা । তাই আমরা ছুটে চলার সিদ্ধান্তই নেই । পথে যে যে জায়

ফ্রম লাদাখ উইথ লাভ! (Part 02)

সকালের ডাললেক একেবারেই অপরিচিতা। রাতের নিস্তব্ধতার কিছুই আর নেই । ‘শিকারা’ (ডাললেকে চলাচল করা সাজানো ছোট কাঠের নৌকা, ছবিতে দৃশ্যমান) নিয়ে হাঁকডাক দিয়ে বেড়াচ্ছে শিকারার মাঝি । অদূরেই উচু পাহাড় এর ফাঁক দিয়ে সূর্যের আরামদায়ক আলো মুখে আলতো করে ছুয়ে যাচ্ছে । চারপাশে মানুষের কর্মব্যাস্ততা বাড়ছে । আমরাও বেরিয়ে পড়লাম আমাদের হাউসবোট থেকে । জাভেদ ভাই গাড়ি নিয়ে আগে থেকেই তৈরি । আমাদের কাশ্মীরে গন্তব্য পেহেল্গাম, গুলমার্গ আর লাদাখ যাবার পথে সোনমার্গ । দেরি না করে তাই যাত্রা শুরু । পথিমধ্যে আপেল বাগান, আখরোট দেখতে দেখতে পৌঁছে গেলাম পেহেলগাম । রাস্তায় আমাদের সঙ্গি ছিল বিখ্যাত ‘লিদার’ নদী । যারা বলিউড-এর পোকা, তারা নানান মুভিতে দেখে থাকবেন এই নদী । জায়গায় জায়গায় বোল্ডার আর ছোট ছোট ফটোজেনিক সেতু । সাথে আরামদায়ক ঠাণ্ডা বাতাস । উদাসী হতে আর লাগে কি! পেহেলগাম অনেকগুলা ভ্যালি-এর সমন্বয় । এখানে ছিল বেতাব ভ্যালি, আরু ভ্যালি । পাহাড়-নদীর পাশে বসে থেকে এখানে সময় কন্দিন দিয়ে চলে যায়, টের পাওয়া দায় । দূরে বরফে ঢাকা সাদা পাহাড়, পাহাড়ের নিচে দৌড়ে বেড়াচ্ছে বেয়াড়া ঘোড়া । এখানে বৃষ্টির কোন ঠিকঠিকানা নাই,

ফ্রম লাদাখ উইথ লাভ! (Part 01)

  ফ্রম লাদাখ উইথ লাভ! (Part 01) লেহ-লাদাখ একটা স্বপ্নের নাম । আমার জন্যও তা ব্যাতিক্রম ছিল না । হঠাৎ করেই এই স্বপ্নের জায়গায় ভ্রমণের সুযোগ মিলে যাবে, তা কল্পনাতেও ছিল না । আকাশের ওপর মরুভূমি, টার্গেট ১৮,০০০ ফিট, নানান ঘটনা-দুর্ঘটনায় সদস্য সংখ্যা ৬ । সময় মাত্র দিন ১০, জী, মাত্র ১০ দিন । কারন আর কিছুই না, আমাদের সুবিশাল লক্ষ্য । প্ল্যান ছিল মূলত দুটো, একটায় দিল্লি-জম্মু-শ্রীনগর-লাদাখ-মানালি-দিল্লি । তবে সময়টা বৈরি, শ্রীনগর-মানালি হাইওয়ে থাকে বন্ধ আর লাদাখের নানান জায়গা ভ্রমণের পারমিট দিল্লী থেকে নিতে হয় এবং তাতে বিস্তর সময়ক্ষেপণ, এম্নিতেই হাতে সময় সীমিত, দিল্লিতে তাই পারমিটের জন্য সময় দেয়া এককথায় ছিল অসম্ভব । লাদাখে গিয়ে পারমিট পাওয়া যায় কিনা, তা দেখা ছাড়া উপায় তাই ছিল না । । তো এমন ক্ষেত্রে আমরা যা করি, প্ল্যান বি তাই তৈরি করেই এগুনো । প্ল্যান বি ছিল দিল্লি-জম্মু-শ্রীনগর-লাদাখ- শ্রীনগর-জম্মু-দিল্লি (পরবর্তীতে বিস্তারিত) । এ ক্ষেত্রে মেইন লেহ-লাদাখ শহর ঘুরেই আমরা ব্যাক করবো । ‘যা হবে দেখা যাবে’ মাথায় নিয়েই তাই শুরু করে দিলাম আমাদের অভিযান । শুরুতেই ছিল আমার সঙ্গীদের নিয়ে এক্

প্রাচীন স্থাপনার গল্প - সত্য সাহার বাড়ি

  প্রাচীন স্থাপনাগুলোতে রহস্য থাকে । থাকে না বলা অনেক গল্প, বাসিন্দাদের দুঃখ-সুখের নানা স্মৃতি । বাতাসে কেমন যেন একটা মন খারাপ করা, ছোটবেলা মনে করিয়ে দেয়া গন্ধ থাকে । থাকে গা ছমছম করা আলো -আধারির খেলা । মনে হয় এই বুঝি আমার সামনে দিয়ে লাল পাড়ের সাদা শাড়ি পরা কোন মানবী, কপালের ঠিক মাঝখানে এত্ত বড় একটা লাল টিপ পড়ে, পায়ের নূপুরে রিনঝিন শব্দ তুলে, দৌড়ে চলে যাবে । তার সেই দৌড়ে চলে যাবার মধ্যে থাকবে লজ্জা, থাকবে আকুলতা, থাকবে আহ্বান । আমি আকর্ষিত হই, আমি আপ্লূত হই । বারবার । প্রাচীন এরকম স্তাপনাগুলোর যত্ন দরকার, দরকার পরিচিতি । ছবির বাড়িটি পরিচিত সত্য সাহার বাড়ি নামে । সত্য সাহাকে সবাই মূলত চিনবেন, 'তুমি কি দেখেছ কভু' - গানটির সুরকার হিসেবে ।

আজগর আলী চৌধুরী জামে মসজিদ - Azgar Ali Chowdhury Jam-e Masjid

আজগর আলী চৌধুরী জামে মসজিদ আনুমানিক ১৭৯৫ সালে আজগর আলী চৌধুরী নামে একজন স্থানীয় ব্যক্তি এই মসজিদটি তৈরি করেন এবং উনার নামানুসারে এই মসজিদটির নামকরণ করা হয় ‘আজগর আলী চৌধুরী জামে মসজিদ’। নগরীর হালিশহরস্থ চৌধুরীপাড়া বাজারের থেকে অল্প সামনে, ১০ শতক জমির ওপর এবং প্রায় ৩০ জন মানুষ ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ২৫০ বছরের পুরনো মসজিদটি বর্তমানে সংস্কার করে, প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা ব্যয়ে এর পশ্চিম দিকে আরেকটি নতুন মসজিদ তৈরি করা হয়, যার চারপাশে লেকের আদলে এবং দূর থেকে পানির ওপর ভাসমান স্থাপনা বলে মনে হয়। মোঘল স্থাপনাকে অনুকরণ করে তৈরি করা এই মসজিদটিতে রয়েছে ২৪ টি মিনার আর তিনটি গম্বুজ। এই মসজিদটির একটি লক্ষণীয় বিশেষত্ব হচ্ছে জানালার অনুপস্থিতি। এছাড়া প্রবেশদ্বারের আকারও খুব ছোট। কালের বিবর্তনে খানিক মাটিতে দেবে যাবার কারণে মসজিদটি একটু এক পাশে বাঁকা! হয়তো আর বেশিদিন নেই এই ঐতিহাসিক স্থাপনা আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে যাবার। সময়ের পরিক্রমায় আর্কিটেকচারাল জৌলুস অনেকটাই কমে গেলেও এর সামনে যখন আপনি দাঁড়াবেন, সেই সময়ের কথা ভেবে আপনার মন উদাসী হতে বাধ্য। Azgar Ali Chowdhury Jam-e Masjid The mosque was

খাঁন সাহেব আবদুল হাকিম মিয়া জামে মসজিদ - Khan Sahib Abdul Hakim Mia Jam-e Mosque

  খাঁন সাহেব আবদুল হাকিম মিয়া জামে মসজিদ চট্টগ্রামের আরেকটি দৃষ্টিনন্দন মসজিদ হিসেবে পরিচিত নগরীর মন্সুরাবাদে অবস্থিত খাঁন সাহেব আবদুল হাকিম মিয়া জামে মসজিদ। বয়সে প্রবীণ এই মসজিদটি কিছুদিন আগেই ছুয়েছে শতবর্ষের মাইলফলক। এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেল বর্তমানে এই মসজিদটির বয়স ১৩৭ বছর। গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে রেনোভেশনের কাজ চলছে এই মসজিদটির। মসজিদটির চারপাশে রয়েছে বেশকিছু পুরনো কবর। ভিন্ন স্থাপত্যশৈলীর এক অনন্য নিদর্শন এই মসজিদটির ভেতরে মূল কক্ষ এবং এবং চারপাশে রয়েছে বর্ধিত অংশ। দেওয়ানহাটের মনসুরাবাদ পাসপোর্ট অফিস ফেলে সামান্য একটু সামনে গিয়ে, হাতের বামপাশ দিয়ে যে গলিটি গেছে, তা ধরে সোজা ৫-৭ মিনিট এগিয়ে গেলেই দেখা মিলবে এই অনিন্দসুন্দর মসজিদটির। Khan Sahib Abdul Hakim Mia Jam-e Mosque Khan Sahib Abdul Hakim Mia Jam-e Mosque is located near Mansurabad, Dewanhat is also known as another beautiful mosque of Chittagong. This age-old mosque has recently reached the milestone of the centenary. Talking to the locals, I came to learn that the mosque is now 137 years old. The mosque has

যোগী থেকে তাজিংডং - বারবার ফিরে যাওয়া পথের গল্প

দু'তিন মাসে একবারে ঘুরতে বের হওয়া আমাদের মত কিছু মানুষের এই হয়েছে কাল! ঘুরে আসার পর সবার সাথে অভিজ্ঞতাটুকু ভাগাভাগি না করলে (পড়ুন সবাইকে না জানালে!) কেমন যেন মনে হয় ভ্রমণ সম্পূর্ণ হল না! ‘মরার উপর খাড়ার ঘা’ হিসেবে যুক্ত হয় লিখে মনের ভাব প্রকাশের অপারগতা এবং লেখা লিখে শেষ না করা পর্যন্ত দুর্বার মানসিক যাতনা! ট্যুরে কষ্ট করে ঘুরে আসার পর, সুতীক্ষ্ণ (!) লেখনি দিয়ে সবাইকে কষ্ট না দিলে কিসের আবার ঘুরাঘুরি! সেই দুরভিসন্ধি বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যেই তাই এ উপস্থাপনা!  যাত্রার প্রাক্কালে পরিকল্পনা করেই বরাবর বের হওয়া আমাদের অভ্যাস। সবাইকেই সেই একই পরামর্শও আমরা দিয়ে থাকি। সে যাইহোক, পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা যাত্রা শুরু করি আলিকদম থেকে তিন্দু হয়ে রেমাক্রি এবং রেমাক্রি থেকে দলিয়ান পাড়ার উদ্দেশ্যে। দলিয়ান পাড়ায় দু’তিনদিন থেকে যোগী পাহাড় সামিট করে, সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম রুটে, প্রায় ২৫ কিলো পাহাড়ি পথ ভেঙে শেরকর পাড়া এবং ওখান থেকে তাজিংডং। পথিমধ্যে লক্ষ্য, বেশকিছু নতুন পাড়া একটু করে হলেও ঢুঁ মারা, নানানভাবে অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ করার প্রয়াস বলতে পারেন।  তো চলুন, নিয়ে যাই আপনাদের, বাংলাদেশের সৌন্দর্যের র